1. lakituli@gmail.com : admin : Engr. Md. Lakitul Islam
  2. lakitul.umec@gmail.com : Sarder Alamin : Alamin Sarder
সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৫৫ অপরাহ্ন
নোটিশ :
বিভিন্ন জেলা,উপজেলা-থানা,পৈারসভা,কলেজ ও ইউনিয়ন পর্যায় সংবাদকর্মী আবশ্যক ।
সংবাদ শিরনাম :
কুড়িগ্রামে উপজেলা আ.লীগ নেতা গ্রেফতার ‘বন্ধু’ সংগঠনের সৌজন্যে শীতবস্ত্র পেলো ৫ শতাধিক শীতার্ত কুড়িগ্রামে ডিজেল পাচার কালে আটক ২ ভারতে অনুপ্রবেশের সময় বিজিবি কর্তৃক যুবক আটক নেত্রকোনা বারহাট্টয় যুবপুরামের উদ্যোগে হুইসেল ব্লোয়ারদের অন্তর্ভুক্তি সভা অনুষ্ঠিত ব্রহ্মপুত্রের ভাঙ্গন ঠেকাতে স্থায়ী ব্যবস্থার দাবিতে নদীতীরে মানববন্ধন মেয়াদোত্তীর্ণ কীটনাশক বিক্রয়ের দায়ে ৩ দোকানিকে জরিমানা দোকান উচ্ছেদের নামে হামলা, লুটপাটের ঘটনায় ব্যবসায়ীদের মানববন্ধন কুড়িগ্রামে বিনামূল্যে উচ্চ ফলনশীল ব্রি-১০০ ধানবীজ বিতরণ কুড়িগ্রামে পিলখানা হত্যা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে মানববন্ধন

সাপে কাটার রোগীকে ঝাড়ফুঁক ও কবিরাজি চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ করে তোলার দাবি, কুড়িগ্রামের ওঝা

  • প্রকাশিত : বুধবার, ২৪ জানুয়ারী, ২০২৪
ছবি লোড হচ্ছে...
ছবি: ওঝা আব্দুল লতিফ (৭৫)
আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:-
ওঝা আব্দুল লতিফ (৭৫)। কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নের অর্জুণডারা এলাকার বাসিন্দা। প্রথমদিকে সাপের খেলা দেখালেও বয়স বেড়ে যাওয়ায় বর্তমানে শুধু সাপে কাটা রোগীর কবিরাজি চিকিৎসা করেন তিনি।
কাউকে সাপে কাটার ঘটনা ঘটলেই ডাক পড়ে আব্দুল লতিফের। সময়মতো রোগীর কাছে পৌঁছাতে পারলে ঝাড়ফুঁক ও কবিরাজি চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ করে তোলার দাবি তার। তার এ দাবির পক্ষে মতামতও দেন স্থানীয়সহ কয়েকজন ভুক্তভোগী। তবে আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের মতে কবিরাজি চিকিৎসার কোনো ভিত্তি নেই বলে জানায় স্বাস্থ্য বিভাগ।
ওঝা আব্দুল লতিফের দাবি ১০ বছর বয়সে হারিয়ে চলে যান পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে। সেখানেই নুরে দরবেশ নামের একজনের কাছে ৯-১০ বছর ধরে শেখেন সাপ ধরা ও কবিরাজি চিকিৎসা। পরে মুক্তিযুদ্ধের (১৯৭১) বছর দুয়েক আগে দেশে ফিরে পেশা হিসেবে বেছে নেন সাপ ধরা ও সাপে কাটা রোগীর কবিরাজি চিকিৎসা। এভাবেই কেটে গেছে তার ৬০টি বছর।
আব্দুল লতিফের পরিবারে স্ত্রী ও দুই ছেলে সন্তান রয়েছে। ছেলেরা বিয়ে করে আলাদা সংসার করছেন। বৃদ্ধ আব্দুল লতিফ সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসা করে যা আয় করেন তা দিয়েই অভাব-অনটনে চলছে স্বামী-স্ত্রীর সংসার।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে ওঝা আব্দুল লতিফ বলেন, ভারত থেকে যুদ্ধের দুই বছর আগে দেশে এসে সাপ খেলা ও সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসা শুরু করি। এটাই আমার পেশা। যা আয় করি তা দিয়েই কোনোরকমে চলি। এখন পর্যন্ত আমি ১০ হাজার সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসা করেছি। এর মধ্যে বিষধর ও নির্বিষ সাপে কাটা রোগী ছিল।
তিনি আরও বলেন, আমি সাপে কাটা রোগী দেখলেই বুঝতে পারি তাকে বিষধর নাকি নির্বিষ সাপ ছোবল দিয়েছে। কঠিন বিষয় হলো বিষধর সাপ কাটলে ক্ষতস্থানে দাগ থাকে না। কোনোরকমে বোঝা যায়, আবার মাঝেমধ্যে যায় না। যদি কাউকে বিষধর সাপ কাটে তাহলে তাকে সুস্থ করতে ১-৭ দিন পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। তাদের মন্ত্র ও ঔষধি গাছের মাধ্যমে চিকিৎসা করি। অনেক গুরুতর রোগীকে সুস্থ করেছি। আমার কবিরাজি চিকিৎসা জীবনে একজন রোগীও খারাপ অথবা মৃত্যুর মতো ঘটনা ঘটেনি। এমনকি হাসপাতাল থেকে আমার কাছে সাপে কাটা রোগী এসেছিল, আমি সুস্থ করেছি।
স্থানীয় রাবেয়া বেগম বলেন, অনেক সাপে কাটা রোগী তার (আব্দুল লতিফ) কাছে চিকিৎসা নিতে আসেন। অনেক রোগী ভালোও হয়েছে।
একই এলাকার মো. হায়বর আলী বলেন, লতিফ সাপুড়িয়ার বাড়িতে অনেক সাপে কাটা রোগী আসে। তার চিকিৎসা ভালো। আমি ৩০ বছর থেকে দেখছি তিনি এ কাজ করছেন।
ওঝা আব্দুল লতিফের প্রতিবেশী আব্দুল রশিদ নামের এক যুবক বলেন, আমি যখন থেকে বুঝি, তখন থেকেই দেখছি আব্দুল লতিফ সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসা করেন। এ ছাড়া তার বাড়িতে সাপও আছে।
সদর উপজেলার বেলগাছ ইউনিয়নের যতিনের হাট এলাকার ভুক্তভোগী সাইফুল ইসলাম বলেন, একদিন রাতে বাজারে যাওয়ার সময় আমাকে সাপে কাটে। তখন আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। পরে পরিবারের লোকজন লতিফ সাপুড়ের কাছে নিয়ে গেলে তিনি আমাকে ঝাড়ফুঁক করে সুস্থ করেন।
তবে কুড়িগ্রাম সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আহ্বায়ক ও সিনিয়র সাংবাদিক শ্যামল ভৌমিক বলেন, ঝাড়ফুঁক দিয়ে সাপে কাটা রোগী সুস্থ হয়, এটি ভুল। যেসব সাপে কাটা রোগী কবিরাজদের কাছে গিয়ে সুস্থ হচ্ছে আসলে তাদের বিষধর সাপে কাটেনি। সব সাপ যে বিষাক্ত তা কিন্তু নয়। তাই বলব কাউকে সাপে ছোবল দিলে সময় নষ্ট না করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া উচিত। তাহলে ওই রোগীর মৃত্যুঝুঁকি অনেকটা কমে যাবে।
কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) শাহিনুর রহমান সর্দার বলেন, সাপে কাটা রোগীর অবশ্যই আধুনিক চিকিৎসা রয়েছে। কাউকে বিষাক্ত সাপ কাটলে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসতে হবে। চিকিৎসকরা শনাক্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। কোনোভাবেই সাপে কাটা রোগীকে কবিরাজের মাধ্যমে ঝাড়ফুঁক করা যাবে না।
কুড়িগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মঞ্জুর-এ মোর্শেদ বলেন, সাপে কাটা রোগীদের আমরা সব সময়ই বলি কবিরাজ বা ওঝাদের কাছে যাবেন না। আপনারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স অথবা জেলা সদর হাসপাতালে আসেন। আমাদের জেলা সদরসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অ্যান্টিভেনম রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সাপে কাটা রোগী দেখলেই আমরা বুঝতে পারি তাকে বিষধর নাকি নির্বিষ সাপ কেটেছে। যদি বিষধর সাপ কেটে থাকে তাহলে আমরা রোগীকে অ্যান্টিভেনম দিই। আর সঠিক সময়ে রোগীকে অ্যান্টিভেনম দিতে পারলে ভালো রেসপন্স পাই। আর যারা কবিরাজ কিংবা ওঝাদের কাছে গিয়ে সময় নষ্ট করে তাদের ক্ষেত্রে ভালো রেসপন্স পাওয়া যায় না।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

‍এই ক্যাটাগরির ‍আরো সংবাদ