আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-
শনিবার, ১০ মে ২০২৫ ইং ০৯:০০ পিএম.
কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলায় গ্রাম্যসালিশে এক নারীর চুল কেটে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। গত মঙ্গলবার (০৬ মে) উপজেলার তবকপুর ইউনিয়নের উত্তর সাদুল্যা রসুলপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় একাধিক নিরপেক্ষ সূত্র সালিশ বৈঠক ও তাতে নারীর চুল কেটে দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
ওই নারীরন অভিযোগ, তাকে কোনও ব্যাখ্যা দেওয়ার সুযোগ না দিয়ে সালিশের জুড়ি বোর্ড আর্থিক জরিমানা করে চুল কেটে দেয়। তার সঙ্গে অন্যায় হয়েছে। তিনি অন্যায়ের বিচার চান।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ওই নারীর সঙ্গে তার দেবরের শারীরিক সম্পর্কের ভিডিওচিত্র ধরে ঘটনার সূত্রপাত। বিষয়টি প্রকাশ হলে ওই নারী এবং তার দেবরের পরিবারে কলহ শুরু হয়। মাইদুল নামে স্থানীয় প্রভাবশালী এক ব্যক্তি বিষয়টি নিয়ে গ্রাম্যসালিশের ডাক দেন। মঙ্গলবার রাতে স্থানীয়ভাবে সালিশ অনুষ্ঠিত হয়।
এলাকাবাসী জানান, সালিশে মাইদুলের নেতৃত্বে সেকেন্দার আলী, শাহীন মিয়াসহ পাঁচ জনের জুড়ি বোর্ড গঠন করা হয়। দেবর-ভাবির অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ ‘প্রমাণ হওয়ায়’ দেবরকে ২০ বেত্রাঘাত এবং ভাবিকে আর্থিক জরিমানাসহ মাথার চুল কেটে দেয়ার সিদ্ধান্ত দেয় জুড়ি বোর্ড। সিদ্ধান্ত মোতাবেক যুবককে বেত্রাঘাত করে ওই নারীর চুল কেটে দেওয়া হয়। তবে নারীকে কত টাকা জরিমানা করা হয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ভুক্তভোগী নারী বলেন, ‘স্থানীয় মাতবররা অন্যায়ভাবে আমার চুল কেটে দিয়ে আমাকে সমাজে হেয় করেছে। আমার সঙ্গে জুলুম করা হইছে। কেউ আমার কাছে শুনতেও আসে নাই কী করি কী হইলো! ওরায় ওরায় বুদ্ধি করি এমন করছে। আমি সঠিক বিচার চাই।’
ঘটনার পর সাংবাদিকদের উপস্থিতির খবরে ওই নারীর দেবরসহ সালিশে নেতৃত্বদানকারী মাইদুল গা ঢাকা দিয়েছেন। তাদের মোবাইল নম্বরও বন্ধ পাওয়া গেছে। ফলে এদের কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
উলিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ জিল্লুর রহমান বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে লোক পাঠিয়েছিলাম। সালিশে চুল কেটে দেওয়ার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। তবে ওই নারী এখনও থানায় কোনও অভিযোগ দেননি। অভিযোগ পেলে আইনি সহায়তা দেওয়া হবে।’
Leave a Reply