আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-
রোববার, ১২ জানুয়ারি ২০২৫ ইং ০৯:০৯ পিএম.
আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী রফিকুলের বউ জাহেদা। আমার জীবনটা নষ্ট করেছে কাওছার।’ কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারীতে চিরকুটে লিখে নিজের মৃত্যুর জন্য এভাবেই দুজনের নাম লিখে এক কিশোরী আত্মহত্যা করেছেন।
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম কেদার গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। মৃত কিশোরী সুবর্না আক্তার সুমনা (১৭) ওই গ্রামের শহিদুল ইসলামের মেয়ে।
শনিবার (১১ জানুয়ারি) সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সুমনা মারা যান। পরে ময়নাতদন্ত শেষে রোববার (১২ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় সুমনার মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ।
মৃত্যুর আগের লেখা চিরকুটে আরও লেখা রয়েছে, ‘আমার জীবনের মূল্য নেই, আমি এ দুনিয়া থেকে চলে যাইতেছি, আমি তখনই শান্তি পাব যখন জাহেদা আর কাওছার সারা জীবন জেলে ধুকে ধুকে মরবে।’
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানিয়েছে, উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের সাধুমোড় এলাকার শহিদুল ইসলামের কিশোরী মেয়ে সুমনার সঙ্গে বাড়ির পাশের আজাদ আলীর ছেলে কাওছারের (২২) প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায় কিশোরী গর্ভধারণ করেন। বিষয়টি প্রকাশ্যে এলে মেয়ের পরিবার বিয়ের জন্য কাওছারকে চাপ দেয়। বিষয়টি নিয়ে কয়েক দফা গ্রাম্য সালিশ বসে। তবে এতে কোনো প্রকার সুরাহা হয়নি। অপরদিকে কাওছার গোপনে অনত্র বিয়ে করে। পরে উপায়ান্ত না পেয়ে সালিশে কাওসারসহ চারজনের নামে কুড়িগ্রাম আদালতে একটি মামলা দায়ের করে। আদালত কচাকাটা থানাকে মামলটি ১০ জানুয়ারির মধ্যে রেকর্ড করার আদেশ দেয়।
এদিকে গর্ভের সন্তানের বয়স পাঁচ মাস পার হয়ে গেলেও তার পরিচয় ও প্রেমের স্বীকৃতি না পেয়ে বুধবার (০৮ জানুয়ারি) রাতে বিষপান করে সুমনা। পরে পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে ভুরুঙ্গামারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। একপর্যায়ে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে পাঠায় কর্তব্যরত চিকিৎসক। রমেকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার সকালে মারা যান সুমনা।
কচাকাটা থানার ওসি ছানোয়ার হোসেন জানান, ‘আদালতের আদেশ পাওয়ার পর মামলাটি মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) রেকর্ড করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’
Leave a Reply