আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-
সোমবার, ১১ নভেম্বর ২০২৪ ইং ০৬:০০ পিএম.
কুড়িগ্রাম সদর ঘোগাদহ ইউনিয়নের বোম্বতর গড়েয়ার পার মাঝিপাড়া এলাকায় বছরের পর বছর ড্রেজার মেশিন ও বলগেট দিয়ে নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে ফাঁকি দিচ্ছে প্রশাসনের চোঁখ। নদী শাসনের জিও ব্যাগ ভরাট করার নামে বিক্রি করছে লাখো টাকার বালু। অন্যদিকে তীরবর্তী অঞ্চল গুলো পড়েছে হুমকির মুখে।
এলাকার প্রভাবশালী সাবেক মেম্বার দুলাল মিয়ার ছোট ভাই দুলু মিয়া, এমন রমরমা বালুর ব্যবসা চালালেও এ ব্যাপারে প্রশাসনের কোনো ভূমিকা নেই বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
এলাকাবাসী জানান, ব্রহ্মপুত্র, নদীতে এক যুগেরও বেশি দিন ধরে নদীর তীরে ড্রেজার মেশিন ও ভলগেট বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে প্রভাবশালী দুলু মিয়া।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় দুইটি বালুর পাহাড় গড়ে তুলেছে দুলু মিয়া। এবিষয়ে জানতে চাইলে দুলু মিয়া বলেন, নদী শাসনের কাজে জিও ব্যাগ ও ব্লোক এর কাজে বালু উত্তোলন করা হয়েছে, তবে দেখা মিলেছে উল্টো চিত্র। সারিসারি ট্রাক্টর টলিতে লোড করা হচ্ছে বালু। নাম না প্রকাশ করায় এক ট্রাক্টর ড্রাইভার বলেন সর্বনিম্ন ১২০০ (বার শত) টাকা হতে ২০০০ (দুই হাজার) টাকা পর্যন্ত প্রতি গাড়ি বিক্রি করা হয়। এবং প্রতি টলি ৮০০ (আট শত) টাকা থেকে ১০০০ (এক হাজার) টাকা বিক্রি হয়।
এভাবে প্রতি বছরে সাত থেকে আট লাখ বালু উত্তোলন হয় ব্রহ্মপুত্র নদের তীরবর্তি অঞ্চল থেকে এর ফলে বন্যার সময় উজানের ঢল ও ভারী বর্ষণে নদীর ভাঙ্গনের দিক পরিবর্তন হয়ে তীরবর্তী চর সহ বেশ কয়েকটি গ্রাম হুমকির মুখে রয়েছে বলে জানা গেছে।
এলাকার অনেকেই জানান, সাবেক মেম্বার দুলালের ছোট ভাই দুলু এক যুগেও বেশিদিন ধরে তার বাড়ির সামনে ড্রেজার মেশিন ও ভলগেট বসিয়ে পাহাড় গড়ে তুলে পরে সেই বালু চরা দামে বিক্রি করে।
এলাকার সচেতন মহল অনেকেই বলেন এভাবে প্রতি বছর ৭ (সাত) থেকে ৮ (আট) লাখ বালু উত্তোলন করা হয়। বিক্রি হয় প্রতি এক হাজার বালু প্রায় ৯ (নয়) থেকে ১০ (দশ) হাজার টাকা। এভাবে প্রতি বছর গড়ে বালু বিক্রি হয় প্রায় ৭০,০০০০০ (সত্তর) লাখ টাকার, এর নেই কোনো ভ্যাট ট্যাক্স ও সরকারি আয় কর। এমন পুঁজি ছাড়া রমরমা ব্যবসায় গড়ে তুলেছে টাকার পাহাড়।
বালু উত্তোলনকারীরা বলেন রাজনীতিক কিছু ব্যক্তি আমাদের অনুমতি দিয়েছেন তাই আমরা বালু উত্তোলন করছি ।
গত ৩০ অক্টোবর বিকেলের দিকে ভ্রাম্যমান আদালত ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা ও দুটি গাড়ি জব্দ করে দুলু মিয়ার বালুর পয়েন্ট থেকে প্রশাসনিকভাবে নিষেধ করা সত্বেও ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রভাবশালী দুলু মিয়া বালুর ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে ঘোগাদহ ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক বলেন, আমামদের ইউনিয়নে তেমন কোনো বালু মহল নেই তাই এমন দুই একটি বালু মহলের দরকার তানাহলে সাধারণ মানুষের বালুর চাহিদা মেটাবে কিভাবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রকিবুল হাসান বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে কাজ বিষয়ে কোনো কথা বলিনি যারা বালু উত্তোলন করছে তাদের প্রশাসনের আওতায় আনা হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাঈদা পারভিন বলেন, আমরা কিছুদিন আগে জরিমানা করেছি এবং বালু উত্তোলন করতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছি তার পরেও ক্ষমতার অপব্যবহার করে যদি কেউ আইন বহির্ভূত কোন কাজে জড়িত থাকে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply