আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-
বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ইং ০৭:৫৯ পিএম.
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলায় দশম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে অপহরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বুধবার বিকালে উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের একটি গ্রামের এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার সকালে মেয়েটির বাবা অপহরণের মামলা করেছেন বলে জানান ফুলবাড়ী থানার ওসি নওয়াবুর রহমান।
পূর্ব ঘোষণা দিয়ে এই অপহরণ করা হয় বলে পরিবার অভিযোগ করলেও পুলিশ বলছে, অপহরণকারীর সঙ্গে স্কুলছাত্রীটির প্রেমের সম্পর্ক ছিল। আগের ঘোষণার সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই।
স্থানীয়রা জানান, সেপ্টেম্বরের শুরুতে উপজেলার ওই গ্রামের হিন্দু পাড়ায় একটি গাছে কে বা কারা চিঠি টাঙিয়ে দেয়।
চিঠিতে লেখা ছিল, ‘এই বাড়ির মেয়েকে তুলে নিয়ে যাওয়া হবে এবং মুসলমান বানানো হবে।’ এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষজন।
এ ঘটনায় ৪ সেপ্টেম্বর ওই মেয়েটির কাকা ফুলবাড়ী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
সেদিন ফুলবাড়ীর ইউএনও রেহেনুমা তারান্নুমের নির্দেশে গাছ থেকে ওই চিঠি সরিয়ে ফেলা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, ১৭ বছর বয়সি মেয়েটি স্থানীয় একটি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
বুধববার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার পথে তাকে অপহরণ করা হয়।
উপজেলার অনন্তপুর গ্রামের প্রয়াত আব্দুল হালিমের ছেলে আলিনুর রহমান (৩৫) ও তার ‘সাঙ্গপাঙ্গ’এই অপহরণের ঘটনা ঘটিয়েছেন।
মেয়েটির বাবা বলেন, “আমার মেয়ে খুবই শান্ত স্বভাবের। সে পড়াশোনায় খুবই মনোযোগী। আমার মেয়ে বাড়ি থেকে প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার পথে আলিনুর ও তার কয়েকজন ‘সাঙ্গপাঙ্গ’ মেয়েকে অপহরণ করেছে।
“আমার মেয়েকে তারা গোপন স্থানে বন্দি করে রেখেছে। আমার মেয়েকে অক্ষত অবস্থায় ফেরত চাই।”
মেয়েটির কাকা বলেন, “আমরা ৪ সেপ্টেম্বর থানায় জিডি করেছিলাম। পুলিশ আন্তরিকভাবে বিষয়টি খতিয়ে দেখলে দুর্বৃত্তদের চিহ্নিত করতে পারত। দুর্বৃত্তদের আইনের আওতায় আনলে আমাদের মেয়ে অপহরণের শিকার হতো না।”
ফুলবাড়ী থানার ওসি নওয়াবুর রহমানের ভাষ্য, যিনি জিডি করেছিলেন তার মেয়ে নয়; অপহরণ হয়েছে তার ভাইয়ের মেয়ে।
“কাজেই ওই চিঠির সঙ্গে এই অপহরণের ঘটনার মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি।”
ওসি বলেন, আলিনুর, তার ভাই আল আমিন, ভগ্নিপতি আব্দুল হানিফ ও বোন রাশেদাকে আসামি করে অপহরণের মামলাটি রেকর্ড করা হয়েছে এবং পুলিশ অপরাধীদের গ্রেপ্তারে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে।
ফুলবাড়ী থানার ওসি বলেন, প্রাথমিক তদন্তে তারা জানতে পেরেছেন, অপহরণকারী যুবকের সঙ্গে স্কুলছাত্রীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কয়েক মাস আগে পারিবারিক চাপে আলিনুর বিয়ে করলেও ছাত্রীটির চাপে ১২ সেপ্টেম্বর স্ত্রীকে তালাক দেন যুবকটি।
ফুলবাড়ী উপজেলার ইউএনও রেহেনুমা তারান্নুম বলেন, তিনি বিষয়টি শুনেছেন। অপহৃত স্কুলছাত্রীকে অক্ষত উদ্ধার ও অপহরণকারীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জন্য তিনি পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন।
Leave a Reply