আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-
বুধবার, ৫ জুন ২০২৪ ইং ০৬:৫৫ পিএম.
কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার দুর্গাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক উৎপল কান্তি সরকারের মান্থলি পে অর্ডার (এমপিও) স্থগিত করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর (মাউশি)। মহাপরিচালকের নির্দেশক্রমে মাউশির শিক্ষা কর্মকর্তা (মাধ্যমিক-১) মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত পত্রে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে। ফলে ওই শিক্ষক জুন মাসে প্রদেয় মে মাসের বেতনের টাকা উত্তোলন করতে পারবেন না।
কুড়িগ্রাম জেলা শিক্ষা অফিসার (ডিইও) মো. শামসুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে ২০২৪ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছে প্রবেশপত্র বাবদ টাকা আদায় এবং বিদ্যালয় মাঠে পশুর হাট বসানো নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। বিষয়টি মাউশির নজরে এলে কুড়িগ্রাম জেলা শিক্ষা অফিসারকে তদন্তের নির্দেশ দেয় মাউশি। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা মেলে। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে উৎপল কান্তি সরকারকে শোকজ করে মাউশি। কিন্তু শোকজের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় তার বেতন ভাতা স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
মাউশির পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, দুর্গাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উৎপল কান্তি সরকারের জবাব সন্তোষজনক বিবেচিত না হওয়ায় তার বেতন ভাতাদি ১ মে থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত করা হলো।
এ বিষয়ে জানতে প্রধান শিক্ষক উৎপল কান্তি সরকার বলেন, ‘আমি জানি না। পারিবারিক কাজে ছুটিতে আছি। না দেখা পর্যন্ত কিছু বলতে পারছি না।’
কুড়িগ্রাম জেলা শিক্ষা মাধ্যমিক অফিসার শামসুল আলম বলেন, ‘দুর্গাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের এমপিও স্থগিত করা হয়েছে বলে জেনেছি। বিলম্ব হলেও শেষ পর্যন্ত মাউশি ব্যবস্থা নিয়েছে।’
প্রসঙ্গত, দুর্গাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উৎপল কান্তি সরকারের বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছে প্রবেশপত্র বিতরণ ও মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা উপেক্ষা করে স্কুল মাঠে পশুর হাট বসানো ছাড়াও সরকারি বরাদ্দ এবং বাণিজ্যিক ঘরের ভাড়াসহ বিদ্যালয়ের নিজস্ব আয়ের প্রায় আড়াই কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে। তদন্তে এসব অভিযোগের সত্যতা পায় উপজেলা প্রশাসন।
এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং দুর্নীতি দমন কমিশন আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করে মাউশির মহাপরিচালক বরাবর প্রতিবেদন পাঠান কুড়িগ্রামের সাবেক জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম। ২০২০ সালে পাঠানো ওই প্রতিবেদন গত চার বছরেও আলোর মুখ দেখেনি।
অভিযোগ আছে, মাউশির অসাধু কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশে ফাইল ‘গায়েব’ করেন প্রধান শিক্ষক। ফলে জেলা প্রশাসকের সুপারিশও আমলে নেয়নি মাউশি।
Leave a Reply