আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:-
কুড়িগ্রামের উলিপুরে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুই সহকারী শিক্ষকের একাধিক অন্তরঙ্গ ছবি এবং ভিডিও ছড়িয়ে পড়ায় এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে।
স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, প্রেমে ব্যর্থ হয়ে এসব ছবি এবং ভিডিও ছড়িয়ে দিয়েছেন মেহেদী হাসান নামে এক শিক্ষক। তবে অভিযুক্ত শিক্ষকের দাবি, ওই নারী সহকর্মী তার স্ত্রী হন। কিন্তু ভুক্তভোগী নারী শিক্ষকের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে বিয়ের কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি।
সরেজমিনে একাধিক সূত্র জানায়, গত বছরের ২২ জানুয়ারি উপজেলার বজরা ইউনিয়নের খামার বজরা মধ্যপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মেহেদী হাসানসহ ওই নারী শিক্ষক যোগদান করেন। এরপর থেকে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তারা দুজনই বিবাহিত বলে জানা গেছে। এর কিছুদিন পর ২৫ মে ওই নারী শিক্ষক তার স্বামীকে তালাকনামা (ডিভোর্স) পাঠিয়ে দেন। তাদের প্রেমের সম্পর্কটি জানাজানি হলে উভয় পরিবারের মাঝে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়।
পরে গত বুধবার (১০ জানুয়ারি) পরিবারের লোকজন নারী শিক্ষিকার অন্যত্র দ্বিতীয় বিয়ে চূড়ান্ত করেন। বিষয়টি মানতে পারেননি শিক্ষক মেহেদী হাসান। ক্ষুব্ধ হয়ে তাদের আপত্তিকর কয়েকটি ছবি তার নিজস্ব ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করেন। শুধু তাই নয় তাদের অন্তরঙ্গ মূহুর্তের দুটি ভিডিও স্থানীয় লোকজনের মেসেঞ্জারে শেয়ার করেন। মূহুর্তেই এসব ভিডিও এলাকার ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের ইনবক্সে ছড়িয়ে পড়ে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী নারী শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব না হলেও তার স্বজনরা জানান, চাকরিতে যোগদানের পর থেকে মেহেদী হাসান নামে ওই শিক্ষক তাকে নানাভাবে বিরক্ত করে আসছিল। এখন তার বিয়ে ঠিক হওয়ায় এসব ছবি-ভিডিও ছড়িয়ে দিচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন বাসিন্দা জানায়, ২০০৯ সালে ওই নারী শিক্ষকের বিয়ে হয়। তখন তিনি এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন। স্বামীর ইচ্ছায় তিনি স্নাতকোত্তর পাস করেন। এরপর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি হওয়ার পর বেপরোয়া হয়ে ওঠেন তিনি। যোগদানের পর সহকর্মী শিক্ষক মেহেদী হাসানের প্রেমে পড়ে নিজ ইচ্ছায় পূর্বের স্বামীকে তালাক দেন। সম্প্রতি পারিবারিকভাবে দ্বিতীয় বিয়ে ঠিক হলে মেহেদী হাসান এসব ছবি এবং ভিডিও ছড়িয়ে দেন।
তবে অভিযুক্ত শিক্ষক মেহেদী হাসান জানান, কয়েকমাস আগে তাদের বিয়ে হয়। তার ফেসবুক আইডি হ্যাক হওয়ায় এসব ছবি ছড়িয়ে পড়েছে।
ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ বলেন, যোগদানের পর থেকে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিষয়টি জানাজানি হলে অভিযুক্ত শিক্ষক মেহেদী হাসানকে ডেপুটেশনে দেওয়া হয়। সম্প্রতি ওই নারী শিক্ষকের বিয়ে ঠিক হওয়ার পর শুনেছি কিছু ছবি এবং ভিডিও ফেসবুকে ছড়ি পড়ে।
উলিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আতাউর রহমান বলেন, বিষয়টি শুনেছি। তদন্ত করে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে।
তবে উপজেলা শিক্ষা অফিসার আমির হোসেন বলেন, তদন্ত করে অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে।
Leave a Reply