নিজস্ব প্রতিবেদক: নিখোঁজের প্রায় দেড় মাস অতিবাহিত হলেও পুলিশের উপ-পরির্দশক (এসআই) আনোয়ার হোসেনের কোন সন্ধান মেলেনি। তাই স্বামীকে ফিরে পেতে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন নিখোঁজ আনোয়ারের অসহায় স্ত্রী নাজমা সুলতানা।
পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি নিখোঁজ থাকায় দুই সন্তানের ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত হয়ে পরেছেন নাজমা সুলতানা। একদিকে সংসার চালাতে কষ্ট, অন্যদিকে সন্তানদের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধের উপক্রম হওয়ায় বরিশাল নগরীর ভাড়াটিয়া বাসা ছেড়ে সন্তানদের নিয়ে পটুয়াখালীর সবুজবাগ এলাকার স্বামীর গ্রামের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন নাজমা সুলতানা।
নাজমা সুলতানা জানান, বরিশাল নগরীর কাউনিয়া থানায় উপ-পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত থাকা অবস্থায় ওই এলাকায় ভাড়ায় বসবাস করে দুই সন্তানকে সেখানকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করা হয়। তাদের বড় ছেলে আয়াতুল্লাহ (১৩) বরিশাল জিলা স্কুলের দশম ও ছোট ছেলে আলী নেওয়াজ (১০) বরিশালের একে সিরাজী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র। বর্তমানে বাবার অনুপস্থিতিতে তাদের শিক্ষাকার্যক্রম বন্ধের উপক্রম হয়ে দাঁড়িয়েছে।
নাজমা সুলতানা আরও জানান, গত বছরের ২৭ মে আনোয়ার হোসেন করোনায় আক্রান্ত হন। এরপর তিনি আরও বেশ কিছু জটিলরোগে আক্রান্ত হলে ডাক্তারের পরামর্শে চিকিৎসাধীন ছিলেন। একপর্যায়ে চলতি বছরের ১ জানুয়ারি আনোয়ার হোসেনকে কাউনিয়া থানা থেকে রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি থানায় বদলি করা হয়। তৎকালীন পুলিশ কমিশনারের কাছে ওই বদলির আদেশ বাতিল চেয়ে ম্যাসেঞ্জারে আবেদন করায় পুলিশ কমিশনার রাগ করেন। ওই ঘটনায় তার (আনোয়ার) বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়। পরে আনোয়ার হোসেন বাঘাইছড়ি থানায় যোগদান করলেও তিনি মানসিকভাবে অনেকটা ভেঙে পরেন।
পরবর্তীতে রাঙ্গামাটির পুলিশ সুপার তাকে ১৭ আগস্ট কুমিল্লা জেলায় বদলি করে ছাড়পত্র দেন। সেখান থেকে ২১ আগস্ট আনোয়ার হোসেন কাউনিয়ার ভাড়া বাসায় এসে স্ত্রী-সন্তানদের সাথে সময় কাটান। চারদিন পর ২৬ আগস্ট বিকেল থেকে আনোয়ার নিখোঁজ হন। এ ঘটনায় নাজমা সুলতানা কোতয়ালি মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
ডায়েরিতে নাজমা সুলতানা উল্লেখ করেন, ২৬ আগস্ট বিকেল চারটার দিকে তার সন্তানকে কোচিং থেকে নিয়ে বাসায় ফিরে এসে তার স্বামীকে আর দেখতে পাননি। পরে বিভিন্নস্থানে খোঁজখবর নিয়েও স্বামীর সন্ধান পাওয়া যায়নি।
নাজমা সুলতানা বলেন, একদিকে স্বামী নিখোঁজ, অন্যদিকে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছি। তারপর দুটি ছেলের শিক্ষাকার্যক্রমও বন্ধের পথে। সবমিলিয়ে এখন আমি নিজেও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পরেছি।
Leave a Reply